সুজিত গৌড় ( হুগলী ) : সিঙ্গুরের পলতাগড় গ্রামে রয়েছে মালাকার পাড়া। শোলা দিয়ে প্রতীমার ডাকের সাজ তৈরী করে মালাকার পাড়ার শোলা শিল্পীরা। আগে এই পাড়ায় ঘরে ঘরে তৈরি হতো প্রতিমার ডাকের সাজ। বর্তমানে দু তিনটে পরিবার ছাড়া আর কেউ এই পেশায় যুক্ত নেই। বহু পরিবার বদলেছে পেশা। তবুও এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে বাড়ির পরিবারের ছোট ছেলে বাবার সাথে কাজে হাত লাগায়।
আবার কেউ মৃত স্বামীর শিল্পসত্তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পুজোর সময় প্রতীমার ডাকের সাজ তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন। আগে দুর্গা পুজোর সময় শ্রীরামপুর, চন্দননগর, সোদপুর সহ বিভিন্ন শহরে বনেদি বাড়ি থেকে ক্লাবের পুজোয় প্রতীমার ডাকের সাজ তৈরি করতো। তাই এই গ্রামের নাম হয়েছিল 'মালাকার পাড়া'। বর্তমানে সেই পাড়ার নাম খোদাই রয়েছে গ্রামের মন্দিরের পাথরের ফলকে। আগের মতো সেই ব্যস্ততা না থাকলেও, এবারের পুজোতেও কয়েকটা বরাত পেয়েছে শোলা শিল্পীরা।
সময়ের সাথে সাথে জলাশয় কমেছে। তৈরী হয়েছে কারখানা থেকে বহুতল আবাসন। কমেছে শোলা চাষ। ফলে বেশি দাম দিয়ে বাইরে থেকে শোলা কিনে ডাকের সাজ করে লাভ নেই কারিগরদের। দাম বেড়েছে ডাকের সাজের জন্য ব্যবহৃত চুমকি, রঙিন জড়ি সহ অন্যান্য দ্রব্যের। ভালো কাজ করে মজুরি নেই। তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছে। কষ্টের জীবনের মাঝেও শোলার সাজে মা দুর্গাকে দেখে যে আনন্দ পায়, তাতেই তারা খুশি। মেলে না সরকারি সাহায্য। সরকারী শিল্পী ভাতা ও আর্থিক সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে মালাকার শিল্পীরা।